গ্রীষ্মের রাজা আম শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইবার। কিন্তু সুস্বাদু এই ফলটি সবার জন্য উপকারী নয়। কিছু নির্দিষ্ট রোগ বা শারীরিক অবস্থায় আম খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে।
১. ডায়াবেটিস রোগী
আমে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ) বেশি থাকে। একটি মাঝারি আকারের আমে প্রায় ৩৫–৪৫ গ্রাম চিনি থাকতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত বা অতিরিক্ত আম খেলে রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তাদের আম খাওয়া ঠিক নয়।
২. স্থূলতা বা ওজন বাড়ছে যাদের
আম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ফল। অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য প্রতিদিন কয়েকটি আম খাওয়া হিতে বিপরীত হতে পারে।
৩. অ্যালার্জি বা স্কিন সমস্যা যাদের আছে
আমের চামড়ায় থাকা এক ধরনের রাসায়নিক (urushiol) কিছু মানুষের ত্বকে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে কাঁচা আম খাওয়ার পর ঠোঁট ফুলে যাওয়া বা ত্বকে চুলকানি দেখা দেয় অনেকের। এ ক্ষেত্রে আম এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪. অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা
খালি পেটে বা অতিরিক্ত আম খেলে গ্যাস্ট্রিক, বুক জ্বালা ও অ্যাসিড রিফ্লাক্স বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে পাকস্থলীতে সংবেদনশীলতা থাকলে আম হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৫. কেমিক্যালযুক্ত বা পরিপক্বতাহীন আম খাওয়া
অনেকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ফরমালিন বা ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে আম পাকান, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব কেমিক্যাল আমে থাকলে তা খেলে হজমে সমস্যা, মাথাব্যথা, বমি কিংবা লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা ও পরামর্শ:
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোগী অবস্থায় আম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- একসাথে অনেক আম না খেয়ে পরিমিত খাওয়া ভালো।
- ফ্রিজে রাখা আম ঠান্ডা অবস্থায় না খাওয়াই শ্রেয়।
- ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত, বিশেষ করে চামড়ার অংশে থাকা রাসায়নিক দূর করার জন্য।
- আম একটি পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় ফল হলেও, কিছু স্বাস্থ্যগত কারণে তা সবার জন্য নিরাপদ নয়। উপকারের আশায় যদি ক্ষতির মুখে পড়তে হয়, তবে সচেতনতা ও পরিমিতিবোধই হতে পারে উত্তম পথ।
আপনার মতামত লিখুন :