ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৭ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর পাঁচজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় দুইটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, সাত-আটটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও তিন-চারটি দোকান লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চালিয়ে রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, বাহাদুরপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার কবরস্থানের একটি গাছ থেকে ফুল ছিঁড়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে জাকির বাড়ি ও পশ্চিমপাড়ার মোল্লাবাড়ির দুই কিশোরের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি দ্রুত উভয় পরিবারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের শতাধিক গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ফলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় জাকির বাড়ির একটি ঘর ও কয়েকটি গাছের স্তূপে অগ্নিসংযোগ, পাশাপাশি উভয় পক্ষের একাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর ও দোকানপাট লুটপাটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
জাকির বাড়ির মো. মোয়াজ্জেম অভিযোগ করে বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোল্লাবাড়ির লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ২৫ জনকে আহত করেছে এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।
অপরদিকে মোল্লাবাড়ির মো. তাজুল ইসলাম জানান, জাকির বাড়ির লোকজনের পাল্টা হামলায় আমাদের ২০ জন আহত হয়েছে এবং আমাদের বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর ও লুট করা হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে গেলে ইট-পাটকেলের আঘাতে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন এবং পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়ার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন ও পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :